সারা বাংলাদেশে সম্পুর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কনস্টেবল পদে নিয়োগ হবে
নবী-মাহমুদ:
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী,আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে ন্যূনতম এসএসসি পাস করা বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশি যেকোনো নারী ও পুরুষ আবেদন করতে পারবেন। তবে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যারা বয়সসীমার মধ্যে পৌঁছেছেন তারাও এবার সুযোগ পাচ্ছেন আবেদনের। এক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য কোটা অনুসরণ করা হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে ২ লাখ ১০ হাজারের মতো ফোর্স রয়েছে। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধাপে ধাপে আরো ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগের নির্দেশনা দেন। তবে করোনার কারণে ২০২০ সালে পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি।
এবার নতুন নিয়মে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সাত ধাপে এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে কোনো ধাপে অকৃতকার্য হলে ওই প্রার্থী আর কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবেন না।
নতুন নিয়মের পরীক্ষার ধাপগুলো হচ্ছে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং,শারীরিক মাপ ও ফিজিক্যাল অ্যান্ডুরেন্স টেস্ট,লিখিত পরীক্ষা, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা, প্রাথমিক নির্বাচন, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্তকরণ।
আবেদনের পর আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে একটি এসএমএস করা হবে। এসএমএসে নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েব পোর্টালে লগইন করার জন্য ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। সেই পোর্টালে লগইন করে আবেদনকারীকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে হবে।
সেই প্রবেশপত্র প্রিন্ট করে নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে অংশগ্রহণ করতে হবে। নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর দিন প্রার্থীদের পুলিশের নির্ধারিত স্কেলে বুকের মাপ ও ওজন-উচ্চতা নেওয়া হবে। এরপর প্রার্থীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করে তাকে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য ‘যোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে তার ফরমে একটি সিল দেওয়া হবে।
পরবর্তী ধাপে অনুষ্ঠিত হবে শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা। এই পরীক্ষার আগে প্রার্থীকে ‘ইনডেমনিটির ঘোষণাপত্র’ নামে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমে ওই প্রার্থী ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ’ আছে বলে ঘোষণা দিয়ে স্বাক্ষর করবেন।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য ধাপে ধাপে সাতটি ইভেন্টে অংশ গ্রহণ করতে হবে। সেগুলো হচ্ছে-দৌড়,পুশ আপ,লং জাম্প,হাই জাম্প,ড্র্যাগিং ও রোপ ক্লাইমিং। এই ধাপের কোনো একটিতে অকৃতকার্য হলে পরবর্তী ধাপের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে না এবং সেখানেই তার পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের ষষ্ঠ ধাপে রয়েছে ড্র্যাগিং পরীক্ষা। এই ধাপে পুরুষ প্রার্থীদের ১৫০ পাউন্ডের টায়ারকে টেনে ৩০ ফুট দূরত্ব ও নারী প্রার্থীদের ১১০ পাউন্ড ওজনের টায়ার ২০ ফুট দূরত্বে আনতে হবে। এছাড়াও রোপ ক্লাইমিং পরীক্ষায় পুরুষদের ১২ ফিট এবং নারীদের ৮ ফিট দড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হবে।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সব ডকুমেন্ট নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে ৪৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরপর লিখিত, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষার পর উত্তীর্ণদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেন,গত জুলাই/২০১৯খ্রি: বাংলাদেশ পুলিশ এর কনস্টেবল পদে নিয়োগে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও দূর্ণীতিমুক্ত ভাবে নোয়াখালী জেলায় ২৩২ জনকে নিয়োগ দেন,শুধুমাত্র ১০৩/-টাকা ব্যাংক ড্রাফট চালানের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় মেধাবী ও দরিদ্র অনেকেই চাকুরির সুযোগ পেয়েছেন,এমনকি রিক্সিওয়ালা ও দিনমজুরের সন্তানও চাকুরি পেয়েছেন।
ঠিক একইভাবে শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে মেধা এবং যোগ্যতার যাছাই করে নতুন নিয়মে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দিবেন বর্তমান-পুলিশ সুপার মোঃশহিদুল ইসলাম,পিপিএম(সেবা)। ঘোষিত সার্কুলারে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন প্রকার তদবিরের সুযোগ নেই বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন,পুলিশ সুপার এবং কোন প্রার্থীর পক্ষে কোন তদবির আসলেই উক্ত প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে জানিয়েছেন। দয়াকরে কোন প্রার্থী অবৈধ চেষ্টা করে নিজে প্রতারিত হবেন না।
সুতরাং আসুন আমদের মেধা ও যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য হয়ে দেশ সেবায় এগিয়ে আসি।